ফোকাস রাইটিং লেখার নিয়ম: Bank Focus Writing: BCS Focus Writing: ফোকাস রাইটিং ভালো করবেন যেভাবে:

যেকোন  লিখিত পরীক্ষার ফোকাস রাইটিং লেখার কৌশল: প্রস্তুতি যেমন হবে ়আপনার ফোকাস রাইটিং।

 একটা বিখ্যাত প্রবাদ আছে:
If people cannot write well, they cannot think well, and if they cannot think well, others will do their thinking for them.” - George Orwell.

উপক্রমণিকাঃ

ব্যাংক বা বিসিএস রিটেনের জন্য ফোকাস রাইটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ টপিক। যেখানে ব্যাংক রিটেনে  ৫০-৬০ মার্ক বরাদ্দ থাকে যা মোট মার্কের শতকরা ২৫-৩০%। হাজারো পরীক্ষার্থীর মধ্য থেকে ১০০/২০০ জনের লিস্টে ঢুকতে চাইলে আমাদের লেখাটাও এমন হতে হবে যেন হাজারের ভিড়ে সেটা হারিয়ে না যায়। সুতরাং সুন্দর জিএফ/বিএফ বানানোর চিন্তা আপাতত বাদ দিয়ে আমাদের উচিত সুন্দর ফোকাস রাইটিং লেখা শেখার ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া।

ফোকাস রাইটিং কিঃ

কোন সুনির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা করে আমরা যা লিখি তাই ফোকাস রাইটিং। উদাহরন দিয়ে ব্যাপারটা বুঝা যাক। ক্ষুদ্রঋণের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে রচনা লিখতে বললে আমরা ক্ষুদ্রঋণ কী, ক্ষুদ্রঋণের ইতিহাস, দেশে-বিদেশে ক্ষুদ্রঋণ, ক্ষুদ্রঋণের সুবিধা-অসুবিধা, বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করি। কিন্তু একই বিষয়ে ফোকাস রাইটিং আসলে আমরা শুধু ক্ষুদ্রঋণের সমস্যা ও সম্ভাবনা এই দুইটি বিষয়ের উপর তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে আলোচনা করব। মানে হচ্ছে ফোকাস রাইটিংয়ে রচনার মতো বিস্তারিত লেখার প্রয়োজন পড়ে না, কর্তৃপক্ষ সেটা চায়ও না। এক্ষেত্রে নিজেকে আলাদা প্রমাণ করতে পারাটা একটা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। আপনি যদি চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেন, তাহলে তুলনামূলক ভালো নম্বর আশা করতে পারেন।

.

ফোকাস রাইটিং এর গুরুত্বঃ

FCA কর্তৃক চালানো সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ফোকাস রাইটিং এ পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত মার্ক্সের শতকরা পরিমাণ নিম্নরূপঃ

*) প্রাপ্ত মার্কস (%) - পরীক্ষার্থীর সংখ্যা (%);

*) ৬০-৮০ - ১০%;

*) ৪০-৬০ - ৪০%

*) ১০-৪০ - ৫০%;

সুতরাং ফোকাস রাইটিং এ ভাল করা আপনাকে চাকুরির দৌড়ে ৯০% পরীক্ষার্থীর চেয়ে এগিয়ে রাখবে;

আদর্শ ফোকাস রাইটিং এর অংশঃ

সকল রাইটিংকেই কয়েকটা অংশে আলোচনা করা যায়, যেমনঃ

  • উপক্রমণিকা;
  •  টপিকটা আসলে কি সেটা নিয়ে আলোচনা;
  • সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা (এটা সাধারণত মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত কোন টপিক আসলে দিতে পারলে খুবই ভাল);
  • বর্তমান অবস্থা/পরিস্থিতি;
  • পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য করণীয়;
  • চ্যালেঞ্জসমূহ;
  • চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিকারের উপায়;
  • পরিশিষ্ট/উপসংহার;

.চমৎকার ফোকাস রাইটিং লেখার কৌশলঃ

ভূমিকা ও উপসংহার হবে সামারির মত। ভূমিকাতে আপনি আপনার রাইটিং এ কি আলোচনা করতে যাচ্ছেন সেটা বলবেন এবং উপসংহারে এতক্ষন কি আলোচনা করলেন সেটা বলবেন। উপসংহারে নতুন কোন কথা না টেনে আনাই ভাল। ভূমিকা ও উপসংহার হচ্ছে কোটেশন দেওয়ার যায়গা, কোটেশনগুলো নীল কালির কলমে লিখতে পারলে ভাল।

ফোকাস রাইটিং এ ফোকাসড থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে পৃষ্ঠা ভরানোর দরকার নেই কারন এমনিতেও সময় কম পাবেন। কম লিখুন, ভাল লিখুন। তাই বলে উত্তর না করে চলে আসা যাবে না, কারন Jodi Picoult বলেছেন,  You can always edit a bad page. You cant edit a blank page.”

প্রতি পৃষ্ঠায় একটা চার্ট, ডাটা দিবেন। ভাল হয় খাতার মাঝের ডানপাশে একটা টেবিল দিয়ে তার বামপাশ দিয়ে লেখা চালিয়ে গেলে। পৃষ্ঠা খুব দ্রুত ভরে যায়।

একই শব্দের বারবার পুনরাবৃত্তি না করে তাদের সুন্দর সুন্দর সিনোনিম ব্যবহার করুন;

সকল ফোকাস রাইটিং ইংরেজিতে শিখবেন, তাহলে ইংরেজি বাংলা যে ভাষাতেই আসুক না কেন উত্তর করতে পারবেন;

.কোন কোন টপিক পড়বেনঃ

  1. দেশের অর্থনীতি, অর্থনীতির বিভিন্ন খাত (কৃষি, শিল্প, পর্যটন), মুদ্রা বাজার, পুঁজি বাজার ও ব্যাংক সেক্টরের সমস্যা ও সমাধান;
  2. আন্তর্জাতিক অর্থনীতি, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ;
  3. বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যাবলী, রোহিঙ্গা ইস্যু;
  4. মেগা প্রজেক্টসমূহ (পদ্মাসেতু, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও অন্যান্য)

পরিশিষ্টঃ

পরিশেষে বলব, একটা সুন্দর ফোকাস রাইটিং এনে দিতে পারে সুন্দর একটা চাকুরি, বউ/বর, সর্বোপরি সুন্দর একটা জীবন। গোপাল ভাঁড় সম্ভবত একদা বলেছিলেন, সব চাইতে বেশি লোক হচ্ছে ডাক্তার। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমি বলব সব চাইতে বেশি লোক হচ্ছে লেখক। আমরা সবাই লিখি, সকালে বিকেলে লিখি, কারনে অকারণে লিখি। কিন্তু আমাদের মধ্যে যারা নিজেদের লেখাকে ব্যতিক্রম করে উপস্থাপন করতে পারে, তারাই সকল ক্ষেত্রে সফলকাম হয়।

আশা করি ফোকাস রাইটিং সম্পর্কে কিঞ্চিৎ ধারণা দিতে পেরেছি। অনেক কিছুই হয়ত বাদ পড়ে গেল, প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাবেন, ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই অনেক ভাল ও সুস্থ্য থাকবেন সেই কামনায়,

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post