ব্যাংক ভাইবা


বাংলাদেশ ব্যাংক সহকারি পরিচালক, অফিসার জেনারেল, কিংবা সমন্বিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা যেকোন সরকারি ব্যাংক ভাইবা এর জন্য যারা মনোনীত হয়েছেন, আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

ভাইবা কেন গুরুত্বপূর্ণ : ভাইবাতে অন্যের চেয়ে এক নম্বর বেশি পাওয়া মানে চাকুরীটি আপনি পাওয়া।

ভাইবাতে যাওয়ার আগে আপনার কি কি কাগজপত্র গুছিয়ে রাখতে হবে: Bank Viva/Combined Bank Viva/ Bangladesh Bank Viva

ভাইবা বোর্ডে কম বেশি সবাই টেনশনে থাকে। এরপরে যদি কোনো ডকুমেন্টসে প্রব্লেম থাকে তাহলে টেনশন কিন্তু আরও বেড়ে যায়। তাই নিচের গাইডলাইন গুলো ফলো করলে টেনশনে ফ্রি তে ভাইবা দিতে পারবেন খুব সহজেই।

ভাইভা শুরু হবার কমপক্ষে ১ ঘন্টা পূর্বে উপস্থিত হতে হবে। চেকিং বোর্ড এ অবশ্যই নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস উপস্থাপন করতে হবে। তাই ভাইবার কমপক্ষে ৫ দিন আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রেডি করে রাখবেন। যেমন:

১.সহস্তে লিখিত আবেদন লাগবে। লিখিত আবেদন পত্র অবশ্যই A4 সাইজ পেপারে লিখবেন। আবেদন পত্রে নিজের সিগনেচার দিবেন। 

২. প্রবেশ পত্র ফ্রেশ কপি রাখবেন। প্রায় দেখা যায় রাফ করা প্রবেশ অনেকে জমা দেয়। এটা অনুচিত এবং বোর্ড স্যাররা এসব পর্যবেক্ষণ করেন।

৩. শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল মুল সনদ (সার্টিফিকেট+মার্কশিট) এবং ১ সেট ফটোকপি সত্যায়িত করে রাখবেন।

৪. যেসব আবেদনের সাথে সাবজেক্ট  উল্লেখ করা থাকে (টেকনিক্যাল পোস্ট এর ক্ষেত্রে)  সেই সাবজেক্টে পাশ না করে থাকলে সেই সাবজেক্টের সমমানের ডকুমেন্টস ডিপার্টমেন্টর চেয়ারম্যান স্যার কতৃক নিয়ে আসতে হবে।

 ৫. নাগরিকত্ব সনদ এবং ১ টি ফটোকপি সত্যায়িত। মহিলাদের ক্ষেত্রে বিবাহিত হলে husband এর নামে  এবং  husband এর স্থায়ী ঠিকানার নাগরিকত্ব সনদ লাগবে। তবে বাবার টাও সাথে রাখবেন। 

৬. যাদের সার্টিফিকেট এবং মার্কশিটে ফল প্রকাশ এর তারিখ উল্লেখ নাই তাদেরকে controller or register building থেকে ফল প্রকাশ এর তারিখ উল্লেখ করে প্রত্যায়ন পত্র আনতে হবে। Department থেকে নিয়ে আসলে গ্রহনযোগ্য নয়। 

৭. কোনো কারণে মুল সনদ হারিয়ে গেলে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে  সনদ উত্তোলন করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করে জিডির কপি নিয়ে আসতে হবে। 

নিজেকে যেভাবে প্রস্তুত করবেন: সমন্বিত ব্যাংক ভাইবা/সরকারি ব্যাংক ভাইবা/ বাংলাদেশ ব্যাংক এডি ভাইবা/ বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার ভাইবা।

সরকারি সকল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল পরীক্ষার ভাইবা মার্কস হলো ২৫। ভাইবা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় মতিঝিল, ঢাকা। লিখিত পরীক্ষার যারা ভালো মার্কস অর্জন করবে তারা চাকরি পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে।     

  •  প্রথমেই বলবো আপনার ড্রেসআপ নিয়ে। আপনার ড্রেস যেন মার্জিত এবং পরিপাটি হয়। টাই পড়াই ভালো। অর্থাৎ আপনার যা কিছু আছে তা যেন পরিস্কার ও পরিচ্ছন হয়। 
  •  Introduce yourself, why you interest to serve in Baking Sector এই Question গুলো জানা।
  • আপনার এলাকার পরিচিত, বিশেষ ব্যক্তিত্ব, স্থান, মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন সেক্টর এর অধীনে ইত্যাদি।   
  • আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমি বিষয় সম্পর্কে প্রাথমিক বিষয়গুলো জানা।     
  • ব্যাংকিং রিলেটেড প্রাথমিক তথ্য যেমন Bank rate, CRR,CSR, Balance Sheet, total Bank, commercial vs Private Bank, Economic Review,Budget etc 
  •  ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ, বিভিন্ন গর্ভণরের নাম ও যে ব্যাংকের ভাইবা দিবেন সেই ব্যাংক সর্ম্পকে, Hierarchy of Bank.
  •  যেদিন ভাইবা ঐদিন দৈনিক পত্রিকার হেডিং এবং বাংলা ও ইংরেজি সাল এবং তারিখ।    
  • যে চাকরি বা প্র‌তিষ্ঠা‌নে আপনি ভাইবা দিতে যাচ্ছেন, সেই সর্ম্পকে তথ্য।  

ওভারঅল যা পারবেন সঠিক উত্তর  দিবেন। না পারলে বলবেন স্যার এই মূহুর্তে পারছি না। 

এছাড়াও অহেতুক ভীতি, অল্পতে ঘাবড়ে যাওয়া, আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা, বিনয়ী না হওয়া এই বিষয়গুলো  পরিহার করতে হবে। 

ভাইবা বোর্ডের কিছু কমন প্রশ্ন:

ভাইভা বোর্ডে যাঁরা থাকেন, তাঁরা কিন্তু নানাভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমেই আপনাকে তাঁদের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেবেন। একজন চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি তাঁর স্মার্টনেস, উপস্থাপন কৌশল, বাচনভঙ্গি এসব বিষয়ও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভাইভা বোর্ডে ঢুকেই অনেকে নিজের অজান্তে প্রথমেই নিজেকে অযোগ্য প্রমাণ করেন বসেন। নিয়োগদাতারা তেমন কোনো প্রশ্ন না করেই বা সৌজন্যতার খাতিরে দু-একটি প্রশ্ন করেই বিদায় করে দেন। এ রকম পরিস্থিতি এড়াতে ও নিজেকে যোগ্য করে উপস্থাপন করার জন্য  কিছু কৌশল আছে যা আপনার জানা খুবই জরুরী। সরকারি এবং বেসরকারি  চাকুরীর ভাইভা তে সাধারণত ফ্রেশার এবং চাকুরীর পূর্ব অভিজ্ঞদের  যেসকল প্রশ্ন করা হয় সে প্রসঙ্গেঃ

ভাইবা বোর্ডে যে প্রশ্নগুলো প্রায় ই করা হয়:

আপনার নাম কি?-

আপনার নামের অর্থ কী?-

এই নামের একজন বিখ্যাতব্যক্তির নাম বলুন?

আপনার জেলার নাম কী?-

আপনার জেলাটি বিখ্যাত কেন?-

আপনার জেলার একজন বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধার নাম বলুন?-

আপনার বয়স কত?-

আজ কত তারিখ?

আজ বাংলা কত তারিখ?-

আজ হিজরি তারিখ কত?-

আপনি কি কোনো দৈনিক পত্রিকা পড়েন?

পত্রিকাটির সম্পাদকের নাম কি?

আপনার জেলার নাম কি? জেলা সম্পর্কে ১ মিনিট বলুন।

আপনার জেলার বিখ্যাত কিছু মানুষের নাম বলুন এবং তারা কি কারনে বিখ্যাত তা আলোচনা করুন।

আপনার বয়স, জন্ম তারিখ কত?

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যা জানেন তা বলেন?

আপনার পরিবার সম্পর্কে বলুন।

আমরা আপনাকে কেন চাকুরিটা দিব?

বিয়ে করেছেন? কেন করেছেন/করেন নি? বিবাহ সম্পর্কে আপনার চিন্তাভাবনা কি?

আরো পড়াশুনা করার ইচ্ছা আছে কি? কেন নেই ইচ্ছা?

এর আগে কোথায় জব করেছেন? সেখানে কি ধরনের কাজ করেছেন?সে জবটি কেন ছেড়ে দিতে হলো?

আপনার নিজের সম্পর্কে (ইংরেজিতে/বাংলাতে) বলুন?

আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বলুন?

আপনার নিজের  Strength / Weakness (SWOT: S-Strength ,W-Weakness, O-Opportunity, T-Threat) কি কি বলে মনে করেন?

যে পদের জন্য আবেদন করেছেন তাঁকে অন্যগুলোর সঙ্গে কিভাবে তুলনা করবেন?

আপনার তিনটি গুন ও দুর্বলতার কথা কি বলতে পারেন?

একজন উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে চিন্তা করেছিলেন?

যেকোনো ১ টি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর সুযোগ পেলে আপনি কোথায় চাকুরী করতেন?

আগামীকাল কোটি টাকা হাতে পেয়ে গেলে আপনি কি করবেন?

আপনার বস অথবা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দ্বারা কি কখনো সততা বিসর্জনের প্রস্তাব পেয়েছেন?

আগামী ৫-১০ বছরে নিজেকে কোথায় দেখতে চান

আপনাকে আমাদের কেন নিয়োগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন?

হার্ড ওয়ার্ক এবং স্মার্ট ওয়ার্ক বলতে কি বুঝেন?

চাপের মধ্যে কাজ করা (Work under Pressure) বলতে কি বুঝেন?

এসকল প্রশ্নের উত্তর না জেনে ভাইবা বোর্ডে যাওয়া আপনার উচিত হবে না। ৫-১০ মিনিটের একটা হ্যান্ডসাম ভাইবা আপনার জীবনের মোড় বদলে দিতে পারে।

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم