ফোকাস রাইটিং টপিকঃ
১) LDC উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় RMG
২) RMG ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন
৩) RMG ও নারী ক্ষমতায়ন
মাত্র ১২ হাজার ডলার রফতানি আয় দিয়ে শুরু করা পোশাক শিল্প আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রেখে চলেছে অনবদ্য অবদান। দেশের মোট রফতানি আয়ের ৮৪ ভাগই অর্জিত হয় তৈরি পোশাক রফতানি থেকে।
ভবিষ্যতের অর্থনীতি
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বেরর ২৬তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩৬ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আজকের এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশের পেছনে রয়েছে পোশাক শিল্পের অবদান অন্যতম। আজ বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশকে ধরা হয়।
জিডিপিতে পোশাক শিল্প
জিডিপিতে পোশাক শিল্পের অবদান প্রায় ১১ ভাগ। ২০২৪-২৫ অর্থবছর নাগাদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮.৫১ ভাগ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে শিল্পের শেয়ার বর্তমান ৩৫ ভাগ থেকে ৪২ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে হবে।
কর্মসংস্থান
পোশাক খাত শুধু দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারকেই সমৃদ্ধ করেনি, একই সঙ্গে নিশ্চিত করেছে প্রায় ৪৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান, যার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই নারী। এ ছাড়াও ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড শিল্প মিলিয়ে শিল্পটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে দেশের প্রায় ৫ কোটি লোক জীবন-জীবিকার জন্য এ শিল্পের ওপর কোনো না কোনোভাবে নির্ভরশীল। দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান এবং তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়িয়েছে এ খাতটি।
বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব
বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার প্রায় ৮ ভাগ। বর্তমান সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে দেশের মোট রফতানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বিজিএমইএ তার নতুন রূপকল্পে ২০৩০ সালের মধ্যে শুধু পোশাক খাত থেকে রফতানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে, এর অর্থ বিশ্ব পোশাক বাজারের ১৪ ভাগ শেয়ার থাকবে বাংলাদেশের।
SDG
সামাজিক অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ৬০ লাখ মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এটি সরাসরি ‘এসডিজি ১ : দারিদ্র্য বিলোপ’ এবং ১ এসডিজি ২ : ক্ষুধা মুক্তি’-এর ওপর প্রভাব রাখবে।
২০৩০ সাল নাগাদ প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগগুলোকে শতভাগ প্রাতিষ্ঠানিককরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি ‘এসডিজি ৪ : মানসম্মত শিক্ষা’র ওপর প্রভাব রাখবে।
পোশাক শিল্পের জন্য সাসটেইন্যাবিলিটি স্ট্র্যাটেজিক ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে জনগণ, জেন্ডার সমতা, শোভন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, পরিবেশ, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ, ইনোভেশন’কে। রূপকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিল্পের প্রবৃদ্ধি এমনভাবে অর্জন করা, যা একাধারে টেকসই হবে এবং গ্রহ ও মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে।
গ্রীন গার্মেন্টস
বাংলাদেশে এখন ১৯২টি লিড গ্রিন কারখানা রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ৬৮টি প্লাটিনাম রেটেড এবং ১১১টি গোল্ড রেটেড। বিশ্বের শীর্ষ ১০টি গ্রিন কারখানার মধ্যে ৮টি বাংলাদেশে অবস্থিত। ২০২২ সালে আমাদের ৩০টি কারখানা গ্রিন হয়েছে। কোনো একক বছরে এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রিন কারখানার সংখ্যা। বিজিএমইএ জলবায়ু বিষয়ে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি চার্টার এবং জাতিসংঘ গৃহীত জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উদ্যোগেও যুক্ত হয়েছে।